অর্থ কী? অর্থের ইতিহাস, প্রকারভেদ সহ বিস্তারিত

দুই বা তার বেশি ব্যাক্তির মাঝে বিনিময় বা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত উপাদানকেই অর্থ বলা হয়। আবার পণ্য বা সেবার বিপরীতে আমরা বিক্রেতাকে যা প্রদান করি, তা’ই অর্থ হিসেবে স্বীকৃত। বর্তমান সময়ে মূলত কাগজি অর্থের প্রচলন থাকলেও অর্থব্যবস্থার প্রচলন হয়েছিল মূলত শামুকের খোল ও ধাতব কয়েনের হাত ধরে। সেই থেকে এখন বিশ্বে বিভিন্ন ধরণের অর্থের দেখা পাওয়া যায়, যেমন - পণ্য অর্থ, সরকারি অর্থ, ব্যাংক নোট, ডিমান্ড ডিপোজিট ইত্যাদি।
Key Points
- অর্থ এক ধরণের ভ্যালু বহন করে এবং মানুষজন পণ্য বা সেবার ভ্যালু পাওয়ার বিপরীতে অর্থের লেনদেন করে।
- অর্থ একই সাথে মিডিয়াম অফ এক্সচেঞ্জ বা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, ভ্যালু বহন করে এবং হিসাবের একক হিসেবে কাজ করে।
- বিনিময় প্রথার বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, যেমন - হিসাবে জটিলতা, সঠিক পণ্য খুজে না পাওয়া, বড় পরিমাণের লেনদেনে অসুবিধা।
- ৯৯৭ থেকে ১০২২ সালের মাঝে সর্বপ্রথম তুঁত গাছের বাকল থেকে কাগজি মুদ্রা তৈরি করা হয়।
ভূমিকা
কখনো ভেবেছেন যে দোকানে গিয়ে চাউল ক্রয়ের পর দোকানদারকে ৭০ টাকা দিলে তা দোকানদার কেনো গ্রহণ করেন? কি আছে এই নোটের পেছনে যার জন্য যেকোনো মানুষ এই নোট গ্রহণ করতে রাজি? আবার নোটের গায়ে কেনো লেখা থাকে যে, “চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে’’? বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রথমেই বর্তমান অর্থব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে হবে। অর্থ কী, কেনো সবাই এটি গ্রহণ ও ব্যবহার করে, অর্থব্যবস্থা শুরু হয়েছিল কিভাবে ও অর্থের প্রকারভেদ সম্পর্কে তাই আমরা আজ বিস্তারিত জানবো।
অর্থ কী?
অর্থ হচ্ছে বিনিময়ের একটি মাধ্যম যা মানুষজন পণ্য বা সেবার বিপরীতে গ্রহণ করে থাকে এবং ঋণ আদায় ও পরিশোধের কাজে’ও এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হাতবদল হয়ে থাকে এই অর্থ। অর্থনীতিতে লেনদেন করার জন্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার জন্য অর্থের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
মূলত অর্থ একধরণের ভ্যালু বহন করে এবং মানুষজন পণ্য বা সেবার ভ্যালু পাওয়ার বিপরীতে অর্থের লেনদেন করে। বিনিময় প্রথার বিপরীতে অর্থের মাধ্যমে লেনদেন আমাদের লেনদেনকে অনেক বেশি ইফেক্টিভ এবং এফিশিয়েন্ট করে তুলেছে।
অর্থ কীভাবে কাজ করে?
অর্থ হচ্ছে একধরণের তরল সম্পদ যা একের অধিক ব্যাক্তির মাঝে লেনদেন করতে সাহায্য করে। অর্থ একই সাথে মিডিয়াম অফ এক্সচেঞ্জ বা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, ভ্যালু বহন করে এবং হিসাবের একক হিসেবে কাজ করে। চলুন এই প্রতিটি বিষয়ে সম্পর্কে বোঝা যাক।
লেনদেনের মাধ্যম
অর্থের আবিষ্কারের পূর্বে মানুষজন নিজেদের মাঝে বিনিময় প্রথার মাধ্যমে লেনদেন করতেন। অর্থাৎ, কারো কাছে এক কেজি গম থাকলে, তার যদি ভুট্টার প্রয়োজন হতো, তাহলে তিনি অন্য একজনের কাছে নিজের গম দিয়ে ভুট্টা গ্রহণ করতেন। কিন্তু বিনিময় প্রথার অনেক সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে মানুষ আস্তে আস্তে স্ট্যান্ডার্ড অর্থের প্রয়োজন অনুভব করতে থাকে। এরই মাধ্যমে প্রথমে প্রাচীন অর্থ যেমন - শামুক-ঝিনুকের খোল, স্বর্ণ ইত্যাদির ব্যবহার শুরু হয়। সেই থেকে পরবর্তীতে ধাতব কয়েন ও আধুনিক যুগে কাগজি অর্থের প্রচলন হয়।
এখন আর কেউ বিনিময় প্রথায় লেনদেন করেন না। বরং কারো যদি এক কেজি ভুট্টার প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি এক কেজি ভুট্টার মূল্য হিসেবে কাগজি অর্থ বা মুদ্রা পরিশোধ করে ভুট্টা ক্রয় করে থাকেন। এই যে পণ্য বা সেবার বিপরীতে অর্থ প্রদান ও গ্রহণ করা হচ্ছে, এটিই হচ্ছে অর্থের লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করা।
ভ্যালু বহন করা
উপরের উদাহরণেই দেখা যাচ্ছে যে মানুষ এখন পণ্য বা সেবার বিপরীতে অর্থ গ্রহণ করছেন। কিন্তু যেকোনো ধরণের পণ্য বা সেবার তো একটি নির্দিষ্ট ভ্যালু রয়েছে, তাহলে এগুলোর বিপরীতে অর্থ গ্রহণ করা হচ্ছে কেনো? তাহলে কি অর্থের’ও নির্দিষ্ট ভ্যালু রয়েছে? জি, অবশ্যই রয়েছে। আধুনিক সময়ে যেকোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উক্ত দেশের অর্থ বা মুদ্রা ইস্যু করে থাকে। এই অর্থ ইস্যু করার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই অর্থের একটি নির্দিষ্ট মান ঠিক করে দেন। এই মান ঠিক করা হতে পারে স্বর্ণের মানের সাথে তুলনা করে অথবা আমেরিকান ডলারের সাথে তুলনা করে।
এখন কথা হচ্ছে যে, আপনি পণ্য বা সেবার বিপরীতে নোট গ্রহণ করলে, সেই নোটের নিশ্চয়তা কি অথবা সেই নোট যে অকেজো হয়ে যাবে না তার গ্যারান্টি কী? জি, নিশ্চয়তা আছে। এই নিশ্চয়তা প্রদান করে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খেয়াল করলে দেখে থাকবেন যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নোটের গায়েঁ লেখা থাকে যে “চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে”। অর্থাৎ, আপনি যদি এই নোটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হোন বা এই নোট যদি আর ব্যবহার করা না যায়, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার আপনাকে এই নোট পরিবর্তন করে অন্য কোনো জিনিস বা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে।
আর নিশ্চয়তা যেহেতু আছে, তার মানে এই অর্থের ভ্যালু’ও আছে। এভাবেই অর্থ ভ্যালু বহন করে থাকে।
হিসাবের একক
আপনি দোকানে গিয়ে এক কেজি চাউল ক্রয় করতে চাইলে দোকানদার আপনাকে বলবে এক কেজি চাউল ক্রয় করতে হলে আপনি ৭০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ, এক কেজি চাউলের ভ্যালু ও ৭০ টাকার ভ্যালু এখানে সমান। আর এক কেজি চাউলের ভ্যালু ৭০ টাকা দ্বারা প্রকাশ করা হচ্ছে। এখন এই মূল্য কিভাবে নির্ধারিত হয় তা বেশ জটিল হিসাব। তবে মূলত মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সাপ্লাই ও ডিমান্ডের সূত্র মেনে এই মূল্য নির্ধারিত হয়ে থাকে।
এইযে বিভিন্ন পণ্য বা সেবার মান নির্ণয়ের জন্য আমরা অর্থকে ব্যবহার করছি, এভাবেই অর্থ হিসাবের একক হিসেবে কাজ করে।
অর্থের ইতিহাস
বিনিময় প্রথার বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, যেমন - হিসাবে জটিলতা, সঠিক পণ্য খুজে না পাওয়া, বড় পরিমাণের লেনদেনে অসুবিধা। আবার পচনশীল দ্রব্যের বিপরীতে পচনশীল দ্রব্য নিলে মানুষ সেটাকে স্টোর করে রাখতে পারতো না। তাই মানুষ বিনিময় প্রথার বিকল্প ব্যবস্থার খোজ চালায়। অর্থ হিসেবে সর্বপ্রথম প্রকৃতিতে পাওয়া উপাদানের ব্যবহার দেখা যায় ১২০০ খ্রিষ্টপূর্বে। যার মাঝে অন্যতম প্রধান হচ্ছে কড়ি বা শামুকের খোল। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে এই জিনিসের প্রাচুর্য্য ছিল, তাই প্রাপ্যতা নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না।
একই সময়ে বাণিজ্যের প্রসারের আলামত পাওয়া যায়, তাই ধারণা করা হয় যে ইউরোপে’ও সেই সময় অর্থ হিসেবে কড়ি গ্রহণ করা হতো। ন্যাটিভ আমেরিকানদের দ্বারা’ও অর্থ হিসেবে কড়ি ব্যবহারের আলামত পাওয়া গিয়েছে। আবার কিছু অঞ্চলে অনেক ভিন্ন কোনো উপাদান ব্যবহার করা হতো, যেমন - ফিজিয়ানরা সেই সময়ে তিমি মাছের দাতঁকে অর্থ হিসেবে ব্যবহার করতো।
বিনিময় প্রথার চেয়ে অর্থ হিসেবে প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার সুবিধাজনক হলেও, এই ব্যবস্থার’ও কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। মানুষের প্রয়োজন ছিল অনেক টেকসই কোনো অর্থ যা সহজে ভাঙবে না বা নষ্ট হবে না। তাই মানুষ ধাতব অর্থের ব্যবহার করা শুরু করে। যদিও ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বে ব্যাবিলনে অর্থ হিসেবে ধাতব কয়েনের ব্যবহার দেখা যায়, তবে তা রেগুলেটেড ছিল না। ধারণা করা হয় যে সর্বপ্রথম খ্রিষ্টপূর্ব ৭ম শতকে তুরস্কের তৎকালীন লিডিয়া সম্রাজ্যে রেগুলেটেড ধাতব কয়েন ইস্যু করা হয়েছিল।
এই ধাতব কয়েন সাধারণত স্বর্ণ ও রৌপ্যের সংমিশ্রণে তৈরি করা হতো। ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে ধাতব কয়েনের ব্যবহার ছড়িয়ে পরেছিল। এই ব্যবস্থা এতোটাই সফল ছিল যে এখনো পৃথিবীর বহু প্রান্তে ধাতব কয়েনের ব্যবহার করা হয়। ছোট ছোট লেনদেনের ক্ষেত্রে সাধারণত তামার কয়েন ব্যবহার করা হতো এবং বড় বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো স্বর্ণ বা রুপার কয়েন। কাগজি মুদ্রা আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত ধাতব কয়েনই ছিল বিশ্বে একমাত্র গ্রহণযোগ্য অর্থ।
কাগজ আবিষ্কারের ক্রেডিট যেহেতু চীনকে দেয়া হয়, তাই ধারণা করা হয় যে কাগজি অর্থের ব্যবহার’ও সর্বপ্রথম চীনে শুরু হয়েছিল। ৯৯৭ থেকে ১০২২ সালের মাঝে সর্বপ্রথম তুঁত গাছের বাকল থেকে কাগজি মুদ্রা তৈরি করা হয়। তবে শুরুতেই এর উদ্দেশ্য অর্থ হিসেবে ব্যবহার করা ছিল না। বরং এটি তৈরি করা হয়েছিল প্রমিসরি নোট হিসেবে। অর্থাৎ, পণ্যের বিপরীতে কয়েন না দিয়ে বরং এই নোট দিলেই কাজ হয়ে যেত। কারো প্রয়োজন হলে সে মহাজনের কাছে নোট দিয়ে স্বর্ণ বা রুপা তুলে নিতে পারতো। তবে স্বর্ণ বা রুপা নিজের কাছে স্টোর করা ঝুকিঁপূর্ণ ও বহন করতে সমস্যা হওয়ায় সবাই নোটের মাধ্যমেই লেনদেন করা শুরু করে।
এখনো সব দেশে অনেকটা একই পদ্ধতি চলমান। তবে বর্তমান সময়ের সাথে তখনকার পার্থক্য হচ্ছে এই যে, তখন নোট ইস্যু করতো বিভিন্ন ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক আর এখন নোট ইস্যু করে সরকার। অর্থাৎ, তখনকার তুলনায় বর্তমানে কাগজি অর্থ ব্যবহার অনেক বেশি রেগুলেটেড।
অর্থের প্রকারভেদ
অর্থ আবিষ্কারের পর থেকে মানুষ নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে অর্থকে বিভিন্ন রুপ দিয়েছে। তবে বর্তমান বিশ্বে প্রধানত ৪ প্রকারের অর্থের দেখা পাওয়া যায়।
১। কমোডিটি মানি বা অর্থ হিসেবে পণ্য
সহজ ভাষায় বললে, বিনিময় প্রথায় যেই অর্থের ব্যবহার হতো সেটাই পণ্য জাতীয় অর্থ। অর্থাৎ, এখানে যেই উপাদান বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে সেটিই অর্থ। এখানে অর্থের মান যেই পণ্য ব্যবহার করা হচ্ছে তার ভ্যালুর ওপর নির্ভর করে। তবে, যেকোনো ধরণের পণ্য যেহেতু সীমিত, তাই এই ধরণের অর্থ’ও সীমিত। আবার একই কারণে এই ধরণের অর্থের অন্তর্নিহিত মূল্য’ও রয়েছে।
নির্দিষ্ট কিছু উপাদান এই কমোডিটি মানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেমন - মূল্যবান স্বর্ণ, রুপা, তামা ইত্যাদি। আবার প্রাচীন যুগে শামুক বা ঝিনুকের খোল কমোডিটি মানি হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
২। ফিয়াট মানি বা সরকারি অর্থ
ফিয়াট শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘সার্বভৌম আদেশ’। ফিয়াট মানির কোনো অন্তর্নিহিত মূল্য থাকে না এবং এই অর্থকে কোনো মুল্যবান উপাদানে কনভার্ট করা’ও সম্ভব নয়। ফিয়াট মানির মান সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হয়ে থাকে এবং সরকার দেশের অভ্যন্তরে এই অর্থের লেনদেন করা বাধ্যতামূলক করে থাকে। মূলত ফিয়াট মানির সাহায্যে সরকার অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কেউ যাতে অর্থের অপব্যবহার করতে না পারে তা এনশিওর করে। বর্তমানে বিশ্বে রাজত্ব করে চলেছে এই ফিয়াট মানি।
আমরা জানি যে, বাংলাদেশের সরকারি মুদ্রা হচ্ছে মূলত ১ টাকা ও ২ টাকার নোট। অন্য আরো যেসব নোট বাজারে প্রচলিত আছে, সেগুলো আসলে সরকারি নোট নয়, বরং সেগুলো হচ্ছে ব্যাংক নোট। তাই ১ ও ২ টাকা সাধারণত সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়।
৩। ফিডুশিয়ারি মানি বা ব্যাংক নোট
বাংলাদেশের ৫ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকার নোট পর্যন্ত সবগুলোই আসলে ফিডুশিয়ারি মানি। এগুলো সরকারি অর্থ হতে ভিন্ন কারণ এগুলো আসলে সরকার ইস্যু করে না। বরং এগুলো ইস্যু করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা। এই কারণেই আপনি ব্যাংক নোটে উপর লেখা দেখবেন যে “চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে”। অর্থাৎ, কোনো ব্যাংক নোট নিয়ে আপনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে গেলে তারা আপনার থেকে ব্যাংক নোট নিয়ে সমপরিমাণ সরকারি নোট দিতে বাধ্য থাকবে।
সরকারি অর্থের মতো ব্যাংক নোটের’ও কোনো অন্তর্নিহিত মূল্য নেই। এগুলো শুধু সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির ভিত্তিতে জনগণের কাছে গৃহিত হয়।
৪। ডিমান্ড ডিপোজিট
ব্যাংকের চলতি ও সঞ্চয়ী হিসাবে আমরা যেই অর্থ জমা রাখি, তা’ই অর্থ হিসেবে স্বীকৃত। কারণ, আমরা চাহিবামাত্র ব্যাংক আমাদের জমাকৃত অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকে। এই কারণেই এই অ্যাকাউন্টগুলো থেকে আমরা যখন ইচ্ছা টাকা তুলে নিতে পারি। টাকা তোলার জন্য সাধারণত চেক বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা হয়।
পরিসংহার
প্রাচীনকালে অর্থনৈতিক লেনদেন ছিল সীমিত ও খুব ছোট পরিসরে, তাই সেখানে রেগুলেশনের বিশেষ প্রয়োজন ছিল না। তবে বাণিজ্যের প্রসারের সাথে সাথে মানুষ একটি নিয়ন্ত্রিত অর্থব্যবস্থার প্রয়োজন অনুভব করতে শুরু করে। এই কারণেই যেসব ধরণের অর্থ সবচেয়ে সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেগুলোই ব্যবহার করা শুরু হয়, যেমন - সরকারি ও ব্যাংক নোট। আবার এখন অর্থনৈতিক লেনদেন যেহেতু অনেক বেশি হয়, তাই এটি নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন’ও আছে। নইলে অর্থের অপব্যবহারের ফলে নিত্যপণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যেতে পারে অথবা সরকার দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে, ঠিক যেমনটা বার বার হয়েছে মধ্যযুগের ইউরোপে।
- https://www.investopedia.com/terms/m/money.asp
- https://open.lib.umn.edu/principleseconomics/chapter/24-1-what-is-money/
- https://unacademy.com/content/bank-exam/study-material/general-awareness/money-definition-economics-history-types-facts/#
- https://economictimes.indiatimes.com/definition/money
- https://www.studysmarter.co.uk/explanations/macroeconomics/financial-sector/money/
- https://www.britannica.com/story/a-brief-and-fascinating-history-of-money
- https://www.investopedia.com/articles/07/roots_of_money.asp
Next to read
মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট (Minimum Viable Product)


লিন ক্যানভাস মডেল (Lean Canvas Model)

বিজনেস মডেল ক্যানভাস ( Business Model Canvas)

নিট মুনাফা (net profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং কিভাবে হিসাব করবেন

ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ

ব্রান্ডিং (Branding)

অর্থনীতি কী?

বিক্রয়ের ১০টি ভুল যেগুলো প্রতিটি বিক্রয়কর্মীর এড়ানো উচিৎ

ই-কমার্স: অনলাইন ব্যবসা
