ফোর ফ্ল্যভরস অব অ্যাকাউন্টিং

575
article image

অ্যাকাউন্টিং একটি কোর সাবজেক্ট হলেও অ্যাকাউন্টিং এর চারটি ফ্লেভার বা টাইপ রয়েছে। ট্যাক্স অ্যাকাউন্টিং , প্রজেক্ট অ্যাকাউন্টিং, ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং , কস্ট অ্যাকাউন্টিং । ফিল্ড ভেদে এই টাইপগুলোর আলাদা মেথড রয়েছে এবং আলাদা স্ট্রাকচার রয়েছে। প্রতিটা ফিল্ড ই সমান গুরুত্বপূর্ণ আর বড় বড় প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনই এই অ্যাকাউন্টিং প্রিন্সিপালগুলো ফলো করা হয়।

Key Points

  • ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং ডে টু ডে ফাইন্যান্সিয়াল ট্রান্সেকশন রেকর্ডে ব্যবহার করা হয়
  • কস্ট অ্যাকাউন্টিং এ মেইন ফোকাস থাকে প্রতিটা ম্যাটেরিয়াল এর পিছনের কস্ট ট্র্যাক করা
  • ট্যাক্স অ্যাকাউন্টিং ব্যক্তিগত এবং কোম্পানির অ্যার্নিং এর উপর কত টুকু ট্যাক্স দিতে হবে তা নির্ধারণ করে
  • প্রজেক্ট বেসড অ্যাকাউন্টিং নির্দিষ্ট কিছু প্রজেক্ট কে বেইস করে সেখানে হওয়া ট্রান্সেকশন গুলকে রেকর্ড করতে ব্যবহার করা হয়
  • একটা অর্গানাইজেশন রান করতে প্রতিটা অ্যাকাউন্টিং প্রিন্সিপালকেই কোনো না কোনভাবে ব্যবহার করা হয়।

ভূমিকা

অ্যাকাউন্টিং একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর টাকা পয়সার সাথে জড়িৎ সকল হিসেব কে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সেই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসার আপ টু ডেট ইনফরমেশন প্রোভাইড করে এবং ম্যানেজেরিয়াল ডিসিশন মেকিং এ সাহায্য করে। অ্যাকাউন্টিং এর ২ টি ফিল্ড রয়েছে। একটা ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং যেটি এক্সটারনাল ইস্যু নিয়ে হেল্প করে আর ব্যবসার লাভ ক্ষতি বের করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে ম্যানেজেরিয়াল অ্যাকাউন্টিং সাহায্য করে ইন্টারনাল ম্যাটারে ভালো ডিসিশন নিতে। এর বাইরেও অ্যাকাউন্টিং এর ৪ টা আলাদা ফিল্ড রয়েছে যেখানে অ্যাকাউন্টিং মেথড গুলোর মেথড, পারপোজ ডিফারেন্ট থাকে।

ট্যাক্স অ্যাকাউন্টিং

নাম টা অনেকটাই পরিষ্কার করে দেয় ট্যাক্স অ্যাকাউন্টিং ট্যাক্স রিলেটেড ফিল্ডের সাথে যুক্ত। দেশে প্রতিটা ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান কে একটি নির্দিষ্ট আয়ের উপর ট্যাক্স দিতে হয়। এই অ্যামাউন্ট টা কত হবে সেটির জন্য ট্যাক্স অ্যাকাউন্টিং মেথড ফলো করা হয়। সাধারণত ২ ধরনের ট্যাক্স মেথড রয়েছে

ডাইরেক্ট ট্যাক্স যেটি কোম্পানি বা ব্যক্তির উপর সরাসরি আরোপ করা হয়। আরেকটা হলো ইন্ডাইরেক্ট ট্যাক্স যেখানে আপনার থেকে বাড়তি টাকা নিয়ে সেই টাকা সরকারকে দেওয়া হয় যেমন VAT ; কোন কিছু কিনলে বা খেলে আপনাকে এক্সট্রা চার্জ দিতে হয় যেটি সরকারকে দেওয়া হয়।

ট্যাক্স অ্যাকাউন্টিং কিভাবে কাজ করে

ধরেন হক ব্রাদারস নামে একটা কর্পোরেশন এর ট্যাক্স অ্যাকাউন্টিং বের করছি কোম্পানির আয় হয়েছে ১০ লাখ টাকা। এখানে এটা প্রফিট নয় শুধু সেলস নেক্সট তাদের খরচ বের করবো

ধরেন ম্যানেজার বেতন, কর্মীদের স্যলারি, প্রোডাক্ট ম্যাটেরিয়াল কস্ট সব মিলে খরচ হয়েছে ৬ লাখ টাকা।

তাহলে তাকে ট্যাক্স দিতে হবে (১০-৬) বা ৪ লাখ টাকার উপর। এই অ্যামাউন্ট টা আরো জটিল হবে যখন ইনভেন্টরি, ডেপ্রিসিয়েশন, টযাক্স ব্রেকেট অ্যাড হবে। আমরা সেগুলো নিয়েও পরবর্তীতে আলোচনা করবো ।

এখন সরকার ধরুন এই বছর ট্যাক্স ধরলো ১৫%। এই অ্যামাউন্ট টা দেশের ইকোনমিক কন্ডিশন, ব্যবসার ফেস ভ্যালু সহ আরো কিছু ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করবে।

তাহলে ভ্যলু দাঁড়াবে ৪ লাখ *১৫%= ৬০ হাজার টাকা

তাহলে কোম্পানিকে ৬০ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হবে বছর শেষে। যদি দেরি হয় সেক্ষেত্রে পেনাল্টি বা ফাইন দিতে হবে।

প্রজেক্ট অ্যাকাউন্টিং

একটা বিজনেসে কয়েক ধরনের ট্রান্সেকশন হয় । এই প্রতিটা ট্রান্সকেশন প্রজেক্ট অ্যাকাউন্টিং এর আন্ডারে পড়ে। ফাইন্যান্স অ্যাকাউন্টিং আর প্রজেক্ট অ্যাকাউন্টিং এর বেসিক ডিফারেন্স হচ্ছে প্রজেক্ট অ্যাকাউন্টিং হলো শর্টটার্ম ।প্রজেক্ট শেষ হলে সেই প্রজেক্ট এর সাথে রিলেটেড সব ট্রান্সেকশন অফ হয়ে যায়। অন্যদিকে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং লং টার্ম। ইয়ার বাই ইয়ার ফাইন্যান্সিয়াল পিরিয়ড অনুসারে তা চলতে থাকে।

একটা প্রজেক্ট শুরু হলে সেই প্রজেক্ট এর জন্য বাজেট প্রেডিকশন, রেভেনিউ জেনারেশন মডেল , কোথায় কোথায় খরচ হবে এই সকল বিষয় সকল তথ্য সেই প্রজেক্ট এর কন্ট্রোলে থাকা ম্যানেজারের কাছে চলে যায়।

স্টেপ বাই স্টেপ বাই গাইড

একটা স্টেপ বাই স্টেপ বাই গাইড দেখি

ধরেন আমি একটা সোয়েটার হুডি আর্মব্যান্ড বিক্রি করি। এটা শীতকালের প্রজেক্ট । এই প্রজেক্ট এর জন্য এখন আমি প্রজেক্ট অ্যাকাউন্টিং রেডি করবো ।

১ বাজেট নির্ধারণ-

সবার আগে একটা প্রজেক্টের জন্য ওভারল বাজেটিং চিন্তা করা হোক। ধরেন সব কিছু মিলিয়ে ৫ লাখ ( ছোট একটা প্রজেক্ট) এখানে অনেক অ্যামাউন্টই assumption এর উপর করা হয়।

২ খরচ বের করা-

এখন আপনার প্রজেক্ট এর জন্য যেই সকল খরচ হবে সেগুলো বের করতে থাকি। যেমনঃ লেবর কস্ট, রিসোর্স কস্ট, রুম ভাড়া। এই সব কিছু মিলিয়ে আমাদের ২ লাখ টাকা খরচ হয়ে যাবে

৩ রেভেনিউ মডেল বের করা-

টাকা খরচ এর সাথে সাথে কোথা থেকে টাকা আসবে সেটা বের করতে হবে। ধরেন আমরা সোয়েটার বিক্রি করবো। সেক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের পার প্রোডাক্ট এ টাকা আসবে, কেউ যদি আমাদের স্পন্সর করে সেখান থেকে টাকা আসবে। এইসকল জায়গা থেকে আমাদের রেভেনিউ মডেল টা জেনারেট করতে হবে

৪ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট-

প্ল্যান A কাজ না করলে প্ল্যান B কি হবে এইসকল বিষয়ে ব্যাকয়াপ প্ল্যান রেডি থাকতে হবে। কয়েকটা অলটারনেটিভ এর জন্য কস্ট বের করে রাখতে হবে এবং তার জন্য এনাফ ফান্ডিং রয়েছে কিনা তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

৫ অডিট-

আমাদের সকল হিসেব ঠিক আছে কিনা কোথাও কোনো ভুল আছে কিনা এসকল বিষয়ে আমাদের অডিট করিয়ে নিতে হবে।

ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং

এটা সবথেকে কমন এবং প্রতিটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং হয়ে থাকে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটা ফাইন্যান্সিয়াল ইয়ারে কোম্পানির ওভারল রেভেনিউ কস্ট এক্সপেন্স আর প্রফিট অ্যানালাইসিস করে কোম্পানির হেড এর কাছে রিপোর্ট সেন্ড করা। এখানে অনেকগুলো এলিমেন্ট থাকে। ব্যালেন্স শিট, ইনকাম স্টেটমেন্ট এগুলো সব ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টিং এর অংশ। ব্যালেন্স শিট কোম্পানির সম্পদ, দায় এর বিষয়কে তুলে ধরে যেখানে ইনকাম স্টেট্মেন্ট এর কাজ হচ্ছে কোপানি কত প্রফিট করছে তার একটা ধারণা দেওয়া।

আমরা একটা সিম্পল ইনকাম স্টেটমেন্ট স্ট্রাকচার দিয়ে ক্লেরিফাই করি আসুন

ব্যালেন্স শিট

সম্পদ

ক্যাশ ৫০০০

ইনভেন্টরি ২৫০০০

সাপ্লাই ৩০০০

ছোট ইনভেস্টমেন্ট ১৫০০০

মোট বর্তমান সম্পদ ৪৮০০০

ইনভেস্টমেন্ট এন্ড ইক্যুয়পমেন্ট ৩০০০০

জমি ২৩০০০

বিল্ডিং ১১৭০০০

ইনভেস্টমেন্ট ১৫০০০

মোট সম্পদ ১৯৬০০০

ইনটেনজিবল সম্পদ

ট্রেড নেমস ৭৫০০০

গুডউইল ৯০০০০

আদার অ্যসেটস ৭০০০

টোটাল অ্যাসেট ৪৩০০০০

দায়

কারেন্ট দায়

অ্যাকাউন্টস পে এবল ৪০০০০

নোতস পে এবল ৭০০০

ইন্টারেস্ট পে এবল ২০০০

ওয়েজেস পে এবল ৭৫০০

অ্যাক্রুড এক্সপেন্স ১৫০০

টোটাল কারেন্ট দায় ৫৮০০০

লং টার্ম দায়

নোটস পে এবল ৩৩০০০

বন্ডস পে এবল ৪৭০০০

টোটাল লং টার্ম দায় ৮০,০০০

টোটাল দায় ১৩৮০০০

শেয়ারহোল্ডার ইক্যুয়টি

কমন স্টক ১০৪০০০

রিটেইনড আর্নিং ৩৬০০০

অ্যাডিশনাল পেইড ইন ক্যাপিটাল ৭৩০০০

ট্রেসারি স্টক ৭৯০০০

টোটাল দায় ও ইক্যুয়টি ৪৩০০০০

কস্ট অ্যাকাউন্টিং

কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর জন্য প্রতিটা ম্যাটেরিয়াল লেবর রিসোর্স অ্যালোকেশন এর ক্ষেত্রে কস্ট অ্যাকাউন্টিং প্রিন্সিপাল ফলো করা হয়। এর লক্ষ্য হচ্ছে কোম্পানির প্রতিটা টাকা কোথায় কোথায় আর কিসে খরচ হচ্ছে তা ট্র্যাক করা। কস্ট অ্যকাউন্টিং এর ক্ষেত্রে এলিমেন্টস গুলো হলো

ডিরেক্ট কস্ট - আপনি প্রতিটা ম্যাটেরিয়াল এর পিছনের কস্ট ট্র্যাক করতে পারবেন

ইনডাইরেক্ট কস্ট- এখানে কিছু কিছু কস্ট আপনি ধরে নিবেন

ভ্যারিয়েবল কস্ট- কতটা ইউনিট তৈরি করছেন তার উপর ভিত্তি করে অ্যামাউন্ট পরিবর্তিত হয়

ফিক্সড কস্ট- আপ্পনি যতই খরচ করেন আপনাকে একটা নির্দিষ্ট টাকা দিতেই হবে

অপারেটিং কস্ট- মেশিনারি আর অন্যান্য ইক্যুইপমেন্ট চালানোর জন্য যে কস্ট হবে

একটা ডেমো দেখা যাক

ডিরেক্ট ম্যাটেরিয়াল ১২০০০

ইনভেন্টরি তে থাকা ডিরেক্ট ম্যাটেরিয়াল ১৩০০০০

পারচেজ ১৪২০০০

ক্লোজিং স্টক অব র ম্যাটেরিয়ালস ৮০০০ ১৩৪০০০

ডিরেক্ট ওয়েজ ৫০০০০

ডিরেক্ট এক্সপেন্স ১০০০০



প্রাইম কস্ট ১৯৪০০০



ফ্যাক্টরি ওভারহেড ৫০০০০



ওয়ার্ক্স কস্ট ২৪৪০০০



ওভারহেড ৪৮৮০০



্টোটাল কস্ট অব প্রোডাকশন ২৯২৮০০

ওপেনিং কস্ট অব ফিনিস গুডস ১০০০০

গুডস ফর সেল ৩০২০০০

সেলিং এন্ড ডিস্ত্রিবিউশন ১৫০০০

কস্ট ইব গুডস সোল্ড ২৮৭৮০০

সেলিং এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন ওভারহেড ২৫০০০

কস্ট অফ সেলস ৩১২৮০০

প্রফিট অন কস্ট ৬২৫৬০

সেলস ৩৭৫৩৬০

উপসংহার

বিজনেস এর মেইন ফুয়েল হচ্ছে টাকা আর সেই টাকার হিসাব রাখার মেইন পিলার হচ্ছে অ্যকাউন্টিং। আশেপাশে যত বড় কোম্পানি রয়েছে সবগুলোতে এই চারটি ফ্লেভার ব্যবহার করা হয় তাদের ডেইলি অপারেশন মনিটর করার জন্য। সাধারণত ইন্টারন্যাশনাল ফ্লোরে GAAP and IFRS standard ফলো করে অ্যাকাউন্টিং রিপোর্ট তৈরি করা হয়।

Next to read
Canvas & Methods
সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)
সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)

ইম্প্যাথি ম্যাপিং মূলত একধরনের ট্যুলস। এটি গ্রাহকদের ভাবনা-চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি, অনুভব, উপলব্ধি সহ নানাবিধ তথ্য, উপাত্ত এর সমন্বয়ে গঠিত সুশৃঙ্খল এবং সুবিন্যস্ত একটি চার্ট। উল্লেখিত বিষয় সমূহ সম্পর্কিত তথ্য উপাত্তের খুব চমৎকার একটা ভিজ্যুয়াল রিপ্রেজেন্টেশন পাওয়া যায় এই ইম্প্যাথি ম্যাপিং এর মাধ্যমে। যা মূলত আপনার কাঙ্ক্ষিত গ্রাহককে ভালভাবে বুঝতে সহায়তা করে।

কাস্টমার ডাটা মনেটাইজেশন মডেল (Customer Data Monetization Model)
Business Models
কাস্টমার ডাটা মনেটাইজেশন মডেল (Customer Data Monetization Model)
মার্কেটিং এর ৭'পি (7P’s of Marketing)
Marketing
মার্কেটিং এর ৭'পি (7P’s of Marketing)
Needs, Wants, Demands (প্রয়োজন, চাওয়া এবং চাহিদা)
Business
Needs, Wants, Demands (প্রয়োজন, চাওয়া এবং চাহিদা)
রেড ওশান এবং ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি (Red Ocean & Blue Ocean Strategy with Example
Business
রেড ওশান এবং ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি (Red Ocean & Blue Ocean Strategy with Example
লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)
Logo
লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
Business
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
সেলস কি এবং কিভাবে তা কাজ করে?
Sales
সেলস কি এবং কিভাবে তা কাজ করে?
‘SWOT’ Analysis
Analysis
‘SWOT’ Analysis
ব্রেটন উডস এগ্রিমেন্ট
Agreement
ব্রেটন উডস এগ্রিমেন্ট