North American Free Trade Agreement

500
article image

North American Free Trade Agreement (NAFTA) হল একটি ত্রি-দেশীয় চুক্তি যা, কানাডা, মেক্সিকো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বানিজ্যিক সমঝোতায় একত্রিত করে। ১৯৯২ সালে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় এবং এটি কার্যকর হয় ১৯৯৪ সালের জানুয়ারিতে। পণ্যের উপর বেশিরভাগ শুল্ক হ্রাস ও বাণিজ্যে অন্যান্য বাধা দূর করার মাধ্যমে, NAFTA তিনটি দেশের মধ্যে বানিজ্যের প্রবৃদ্ধি, প্রসার ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক মজবুত করতে প্রতিষ্ঠিত হয়।

Key Points

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডার মধ্যে বাণিজ্যকে বৃদ্ধি করার জন্য ১৯৯৪ সালে উত্তর আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (NAFTA) যাত্রা শুরু করেছিল।
  • NAFTA-এর লক্ষ্য হল, তিনটি অংশগ্রহণকারী দেশের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক হ্রাস বা বাদ দিয়ে এবং আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যে অন্য বাধাগুলো হ্রাস করে একটি বিশাল মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল তৈরি করা।
  • NAFTA ছিল একটি বিতর্কিত চুক্তি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একে "এখন পর্যন্ত করা সবচেয়ে খারাপ বাণিজ্য চুক্তি" বলে অভিহিত করেন।
  • NAFTA সংস্কার না করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা নতুন একটি চুক্তি (USMCA), ৩০ নভেম্বর, ২০১৮-এ স্বাক্ষর করে, যা ১ জুলাই, ২০২০-এ NAFTA-কে প্রতিস্থাপিত করে পূর্ণরূপে কার্যকর হয়৷

North American Free Trade Agreement (NAFTA) কি

কৃষি, টেক্সটাইল এবং অটোমোবাইল পণ্যের উৎপাদনে বানিজ্যিক বাধা হ্রাস করার উপরে এই চুক্তিটির অন্যতম ফোকাস ছিল। চুক্তিটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির সুরক্ষা, বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া স্থাপন এবং শ্রম ও পরিবেশগত সুরক্ষা বাস্তবায়নেরও চেষ্টা করেছিল। ফলাফলস্বরূপ চুক্তির অধীনে উত্তর আমেরিকার আঞ্চলিক বাণিজ্য তিনগুণ বেড়ে যায় এবং দেশ তিনটির মধ্যে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের প্রসার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

ধরুন, একটি গাড়ি তৈরি করা হচ্ছে, যার ইঞ্জিনটি তৈরি হয় যুক্তরাষ্ট্রে, দরজাগুলো কানাডার তৈরি, স্পিডোমিটার জার্মানী বা চীন থেকে আসে কিন্তু Assembled করা হয় আমেরিকাতে, সিট বেল্ট আসে জাপান থেকে, সিটগুলো মেক্সিকোতে এবং টায়ার তৈরি হয় জাপানে। তাহলে দেখা যায় যে, এই গাড়িটির প্রায় ৬৫% জিনিসপত্রই উত্তর আমেরিকার দেশগুলো থেকে আসে।

এখন এই গাড়িটির আলাদা আলাদা এতসব জিনিসপত্রের যদি শুল্ক না দিতে হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি গাড়িটির দাম কয়েকগুন কমে যাবে। গাড়ির মত এরকম হাজার হাজার পণ্যের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকম। তাই উত্তর আমেরিকার তিন দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো নিজেদের মধ্যকার বানিজ্যে শুল্ক হ্রাস করে, বানিজ্যিক সুসম্পর্ক রক্ষা এবং অধিক লাভের জন্য একটি চুক্তিতে সম্মত হন যা হল North American Free Trade Agreement বা NAFTA।

১৯৯২ সালে স্বাক্ষরিত ত্রিদেশীয় চুক্তির ফলে উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে একটি মুক্ত বাণিজ্য এলাকা তৈরি হয়। এবং বানিজ্যে শুল্ক ও অন্যান্য বাধা দূর করার মাধ্যমে দেশ তিনটি অবাধে হাজার হাজার পন্যের বাণিজ্য করতে পারত। এতে করে তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটে যা উত্তর আমেরিকার বাণিজ্যে আমুল পরিবর্তন ঘটায়।

NAFTA-এর ইতিহাস

সমস্ত মার্কিন আমদানির প্রায় এক-চতুর্থাংশ জিনিসপত্র যেমন তেল, যন্ত্রপাতি, সোনা, যানবাহন, ফ্রেস এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার ইত্যাদি মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে আসে। আবার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মার্কিন রপ্তানি, বিশেষ করে যন্ত্রপাতি, গাড়ির যন্ত্রাংশ, খনিজ জ্বালানি/তেল, এবং প্লাস্টিক কানাডা এবং মেক্সিকোতে করা হয়। তাই নিজেদের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানির এত বড় বাজারকে সহজ ও লাভজনক করার চিন্তা ছিল উত্তর আমেরিকার তিন প্রতিবেশী দেশের, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা।

তাদের এই ভাবনা আরও ডালপালা মেলে ১৯৮০-এর দশকে এসে। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এর প্রতিবেশী দেশগুলো একটি বানিজ্য চুক্তির জন্য তীব্র আলোচনা শুরু করে। ফলশ্রুতিতে ১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরে, তিন বছরের দীর্ঘ আলোচনার পর, মার্কিন-কানাডিয়ান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (CUSFTA) স্বাক্ষরিত হয়, যা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাধাগুলিকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়।

CUSFTA-এর সাফল্যের উপর ভিত্তি করে, মেক্সিকোকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আলোচনা শুরু হয়। পরর্বতীতে মেক্সিকোর চুক্তিতে যোগদানের প্রেক্ষিতে, ১৯৯২ সালের ১৭ই ডিসেম্বর, দেশ তিনটি NAFTA স্বাক্ষর করে। যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ. বুশ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী ব্রায়ান মুলরোনি, এবং মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট কার্লোস স্যালিনাস ডি গোর্টারির বছরের পর বছর ধরে চলা শ্রমসাধ্য আলোচনার সমাপ্তি ঘটায়। এবং ১৯৯৪ সালের জন্ম পহেলা জানুয়ারী, NAFTA এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

NAFTA-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

এই ঐতিহাসিক বানিজ্যিক চুক্তিটির মোট ২২টি অধ্যায় রয়েছে যা আটটি বিভাগে বিভক্ত। প্রত্যেকটি বিভাগের আলাদা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে-

বাণিজ্য শুল্ক ও অন্যান্য বাধা দূরীকরণ

NAFTA বাস্তবায়নের আগে, উচ্চ আমদানি শুল্কের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডার মধ্যে উৎপাদিত পণ্যের আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য ছিল না বললেই চলে। তাই NAFTA-এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল তিনটি দেশের মধ্যে বাণিজ্যের উপর আরোপিত শুল্ক এবং অন্যান্য বিধিনিষেধ দূর করা।

এছাড়াও, শুল্ক ব্যতীত অন্যান্য সমস্যাসমূহ, যেমন বর্ডার প্রসেসিং এবং লাইসেন্সিং এর মতো বাধা দূর করারও দায়িত্বভার নিয়েছিল চুক্তিটি। মোটকথা পুরো উত্তর আমেরিকা জুড়ে বানিজ্যের জন্য Level playing field তৈরি করাই ছিল NAFTA-এর লক্ষ্য।

বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির সুরক্ষা

বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি অধিকার (IPR), NAFTA এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোকাস পয়েন্ট ছিল। চুক্তিটি কপিরাইট, ট্রেডমার্ক, বাণিজ্য গোপনীয়তা এবং অন্যান্য ধরণের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির জন্য শক্তিশালী সুরক্ষা নীতি প্রদান করেছে। এই সুরক্ষা নীতিগুলো ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রযুক্তি এবং বিনোদন শিল্পের জন্য প্রযোজ্য ছিল। এর মাধ্যমে, NAFTA, নতুন আবিষ্কার এবং প্রযুক্তির বিকাশকে বৃদ্ধি করে।

পরিবেশ রক্ষা ও শ্রমের সুরক্ষা

ক্লিনটন প্রশাসন, NAFTA-এর সাথে পরিবেশ এবং শ্রম অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি পার্শ্ব চুক্তি যোগ করে। এই পার্শ্ব চুক্তিগুলির মাধ্যমে, পরিবেশগত আইন রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি এবং বাণিজ্য সুবিধা অর্জনের জন্য শ্রম আইন ভঙ্গ না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তাদের লক্ষ্য ছিল যে NAFTA-এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেন পরিবেশ বা শ্রমিকদের জন্য অমঙ্গল ডেকে না আনে।

বিরোধ নিষ্পত্তি

NAFTA-এর অধীনে কোন সমস্যার সমাধানের জন্য, জাতীয় আদালতে দীর্ঘ এবং ব্যয়বহুল মামলার পথ অবলম্বন না করে, সালিসের মাধ্যমে সমাধান করার কথা উল্লেখ করা হয়। এই ব্যবস্থাটি বাণিজ্য দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ সমাধানকে উন্নীত করে এবং সদস্য দেশগুলির মধ্যে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখতে সাহায্য করেছে। যদিও এই প্রক্রিয়াটি তিনটি দেশেই ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল।

NAFTA এর সুবিধা

আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং এই বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ও অন্যান্য বাধাগুলো দূর করে তিনটি দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে বৃদ্ধি করতে NAFTA তাৎক্ষণিকভাবে সাফল্যমণ্ডিত হয়েছিল। এই চুক্তি তিনটি দেশের বাণিজ্যিক প্রবৃদ্ধিকে অনন্য মাত্রা প্রদান করে-

বাণিজ্য সম্প্রসারণ

NAFTA এর সদস্য দেশ- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো-এর মধ্যে ব্যাপকহারে বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটায়। এটি বেশিরভাগ শুল্ক এবং বাণিজ্য বাধা হ্রাস ও দূর করার এবং এটি পণ্য এবং সেবাসমূহের সাপ্লাই সহজতর করার মাধ্যমে বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি

চুক্তিটি পুরো উত্তর আমেরিকা জুড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করেছে। বাণিজ্য বাধা কমিয়ে এবং আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগকে বৃদ্ধি করার মাধ্যমে, NAFTA অর্থনৈতিক কার্যকলাপ এবং বাণিজ্যে লাভের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এই চুক্তির ফলে, দেশ তিনটি বছরে এক বিলিয়ন ডলারের বানিজ্য করে।

পন্যের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি

চুক্তির ফলে একটি পন্য তৈরীর জন্য বিভিন্ন সদস্য দেশ থেকে আলাদা আলাদা তৈরী সামগ্রী আনা হত এবং উৎপাদন প্রক্রিয়া অপ্টিমাইজ করা সক্ষম হত। যার ফলে খরচ সাশ্রয়ী, উচ্চ গুনগত মানসম্পন্ন পন্য তৈরী করা সম্ভব হতো, যা বাজারে প্রতিযোগিতা ও ভোক্তা সুবিধা বৃদ্ধি করে।

বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের নিরাপত্তা

NAFTA, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তিসমুহের শক্তিশালী সুরক্ষা প্রদান করেছে। ওষুধ, প্রযুক্তি এবং বিনোদনের মতো বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল পন্য ও শিল্পগুলোর জন্য এই নীতি বিশেষভাবে সুবিধাজনক ছিল।

পরিবেশ এবং শ্রম মান রক্ষা

NAFTA পরিবেশগত এবং শ্রম মান সংক্রান্ত পার্শ্ব চুক্তি অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা এবং শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করে।

NAFTA-এর অসুবিধা

যদিও NAFTA-এর অনেক সুবিধা ছিল, পাশাপাশি এর কিছু অসুবিধা ছিল যা এই চুক্তিকে সমালোচিত করে। এর ত্রুটিগুলি, সদস্য দেশগুলির মধ্যে উদ্বেগ এবং বিতর্ক তৈরি করে।

NAFTA স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকেই সমালোচকরা সবচেয়ে বেশী চিন্তিত ছিলেন যে, চুক্তির ফলে মার্কিন শ্রমিকরা চাকরি হারাবে যা মেক্সিকোতে স্থানান্তরিত হবে। আসলে মেক্সিকোতে শ্রমিকের খরচ কম হওয়াতে, অনেক কোম্পানি তাদের উৎপাদন কার্যক্রমকে মেক্সিকোতে স্থানান্তরিত করেছিল। বিশেষ করে, হাজার হাজার মার্কিন অটো কর্মী এবং গার্মেন্ট-শিল্পের শ্রমিকরা এর ফলে চাকরি হারায়।

NAFTA এর অধীনে কৃষি খাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এতে মেক্সিকান কৃষকরা সবচেয়ে বেশি অসুবিধার সম্মুখীন হয়।

সমালোচকরা আরও যুক্তি দিয়েছিলেন যে NAFTA পরিবেশগত সমস্যাগুলোর যথাযথ সমাধান করেনি। চুক্তিতে পরিবেশগত বিধি প্রয়োগ এবং পরিবেশের অবক্ষয় রোধ করার জন্য শক্তিশালী বিধান ও কার্য়ক্রমের অভাব ছিল।

NAFTA এর অধীনে, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা যদি মনে করত যে তাদের বিনিয়োগের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে, তাহলে তারা Investor-State Dispute Settlement (ISDS) নীতি বলে সরকারের বিরুদ্ধে তারা মামলা করতে পারত। সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছিল এই নীতি, সরকারের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার জন্য খুব বেশি ক্ষমতা দিয়েছে, যার ফলে জাতীয় সার্বভৌমত্বও ক্ষুণ্ন হতে পারে।

ব্যর্থ NAFTA, নতুন চুক্তি USMCA

২০১৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে তিনি NAFTA-কে সবচেয়ে খারাপ চুক্তি হিসেবে আখ্যা দেন এবং এই চুক্তি নতুন করে আলোচনা শুরু করেন। তিনি ঘোষণা দেন, তার মত অনুযায়ী চুক্তি নিয়ে আলোচনা না করলে, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি থেকে সরিয়ে নিবেন। ট্রাম্প মূলত উৎপাদন খাতে মার্কিন শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারের কথা বলতেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন মার্কিন শ্রমিকদের এই চুক্তির মাধ্যমে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

যাইহোক, আগষ্ট ২০১৭-এ কানাডা, মেক্সিকো, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা চুক্তির জন্য পুনরায় আলোচনা শুরু করে। কিন্তু ২০১৮-এর এপ্রিলে, ট্রাম্প কানাডিয়ান ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের উপর আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার পর কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তাই আলোচনায় বসা এবং চুক্তি সংস্কারের ব্যাপারে কানাডা প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো টালবাহানা শুরু করেন।

এমতাবস্থায়, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে আমেরিকা ও মেক্সিকো একত্রিত হয়ে নতুন বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণায় দেয় যাতে বিভিন্ন নীতির সংস্করণ এবং নতুন কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে। এই চুক্তিতে এক হওয়ার জন্য, ট্রাম্পের ক্রমাগত চাপের পরিপ্রেক্ষিতে, জাস্টিন ট্রুডো ৩০ সেপ্টেম্বর নতুন চুক্তিতে যোগদানের সম্মতি প্রকাশ করে। নতুন চুক্তির নাম দেওয়া হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তি (USMCA) যা তিনটি দেশের দ্বারা ৩০ নভেম্বর ২০১৮-এ স্বাক্ষরিত হয়।

শেষকথা

NAFTA মৌলিকভাবে উত্তর আমেরিকার অর্থনৈতিক সম্পর্ককে পুনর্নির্মাণ করে, যা কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত অর্থনীতি এবং মেক্সিকোর উন্নয়নশীল অর্থনীতির মধ্যে একটি যোগসূত্র তৈরি করে। পাশাপাশি এটি ১৫ বছরের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগ এবং তিনটি দেশের মধ্যে পণ্য ও সেবার পরিবহনে অবশিষ্ট বাধাগুলিকে ধীরে ধীরে দূর করার আহ্বান জানায় এবং অনেকাংশে সফলও হয়।

NAFTA আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে একটি মাইলফলক ছিল, যা আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির নজির স্থাপন করে এবং এর সদস্য দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সম্প্রীতি স্থাপন করে। এই বহুল আলোচিত চুক্তিটি তাই, বর্তমানের উত্তর আমেরিকার রমরমা বাণিজ্যের নেপথ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসাবে রয়ে গেছে।

  • https://www.investopedia.com/terms/n/nafta.asp
  • https://www.britannica.com/event/North-American-Free-Trade-Agreement/Renegotiation
  • https://hiddenshell.ru/bn/severoamerikanskaya-zona-svobodnoi-torgovli-nafta-nafta--/
Next to read
Business Models
অ্যাড অন মডেল (Add On Model)
অ্যাড অন মডেল (Add On Model)

অ্যাড অন মডেলে মূলত কোনো একটি পণ্য বা পরিসেবার জন্য বাজারে অন্য প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম মূল্য (কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিনামূল্য) নির্ধারণের মাধ্যমে গ্রাহক চাহিদা সৃষ্টি করা হয়। আর পণ্য বা সেবাটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন গ্রাহক মনে ঐ নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবার বাইরেও ঐ পণ্য সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত ফিচার কিংবা সেবার প্রতি প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়। এর ফলে গ্রাহক ঐ পণ্যটির বাইরেও অন্যান্য পরিষেবা গুলোও অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে। এভাবে এই অ্যাড অন বিজনেস মডেল টি মূলত কাজ করে থাকে।

কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
Canvas & Methods
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
সাবস্ক্রিপশন মডেল (Subscription Model)
Business Models
সাবস্ক্রিপশন মডেল (Subscription Model)
রেড ওশান এবং ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি (Red Ocean & Blue Ocean Strategy with Example
Business
রেড ওশান এবং ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি (Red Ocean & Blue Ocean Strategy with Example
লোগোর প্রকারভেদ (Types of Logos)
Logo
লোগোর প্রকারভেদ (Types of Logos)
মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ
Business
মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ
হোরেকা (HORECA)
Business
হোরেকা (HORECA)
CSR বা Corporate Social Responsibility কী?
Business
CSR বা Corporate Social Responsibility কী?
ব্রান্ডিং (Branding)
Branding
ব্রান্ডিং (Branding)
রিব্র্যান্ডিং (Rebranding)
Branding
রিব্র্যান্ডিং (Rebranding)